চাপাতি হাতে এক ঘণ্টার তাণ্ডব, স্ত্রী-সন্তান-শ্বশুরকে বাঁচাল পুলিশ

চট্টগ্রাম •

প্রেমের বিয়ে। পারিবারিক বিরোধের জেরে এক সময় হয়ে যায় বিচ্ছেদ। এরপরও শ্বশুরবাড়ি গিয়ে চালাতেন স্ত্রীর ওপর নির্যাতন। দিন দিন এর পরিমাণ যেন বেড়েই চলছিল। সবকিছুর যেমন শেষ থাকে, ঠিক তেমনি শেষ দেখা হয়েছে তার ক্ষেত্রেও। ধারালো চাপাতি হাতে স্ত্রী-সন্তান ও শ্বশুরের ওপর হামলা চালাতে গিয়ে আটক হয়েছেন পুলিশের হাতে।

শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ।

আটক সুজন হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের পূর্ব মেখল আলীপুর এলাকার সাধন মেম্বারের বাড়ির সাধন দাশের ছেলে।

পুলিশ জানায়, ১৩ বছর আগে ভালোবেসে সুতৃষ্ণা দাশকে বিয়ে করেন সুজন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। নগরের আসকার দীঘি এলাকায় থাকেন তারা। সম্প্রতি সুজন পরকীয়া করতে গিয়ে স্ত্রীর কাছে ধরা পড়েন। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হয়।

সর্বশেষ তিনদিন আগে তা চরম পর্যায়ে পৌঁছালে রাগ করে পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় বাবার বাড়ি চলে যান সুতৃষ্ণা। এরপর সুজন বারবার তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বললেও রাজি হননি তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই সুতৃষ্ণা ও তার বাবা-মাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন সুজন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন দুটি চাপাতি কেনেন। এরপর চাপাতি দুটি নিয়ে শনিবার রাতে শ্বশুরের বাসায় উঠতেই দেখে ফেলেন সুতৃষ্ণা। তখন তিনি দ্রুত ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। এ অবস্থায় সুজন প্রথমে দরজায় ধাক্কা দেন। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা না খোলায় তিনি দরজায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে দরজা কিছুটা নড়বড়ে হলে ভেতর থেকে আলনা, টেবিল, সোফা দিয়ে দরজা আটকে রাখেন সুতৃষ্ণা ও তার বাবা-মা। উপায় না পেয়ে একপর্যায়ে তারা থানায় ফোন করেন। এরপর রাত ১১টা ১০ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ।

পুলিশকে দেখে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সুজন। চাপাতি নিয়ে কয়েকবার পুলিশের দিকেও তেড়ে আসেন তিনি। একপর্যায়ে নিজের গলায় চাপাতি ধরেন, পুলিশ চলে না গেলে নিজেকে ‘শেষ’ করে দেওয়ার হুমকিও দেন। এভাবে চলতে চলতে প্রায় এক ঘণ্টার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সুজনকে নিবৃত্ত করে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তার কাছ থেকে চাপাতি দুটিও উদ্ধার করা হয়।

ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, সুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টা, হত্যাপ্রচেষ্টা ও হুমকি দেওয়ার অপরাধে মামলা হয়েছে। রোববার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।